ভারতীয় উপমহাদেশের সাম্প্রদায়ীকতা রোধে নজরুলের অবস্থান : কাজী নজরুলকে বলা হতো অসম্প্রদায়ীক কাজী। পরাধীন ভারতবর্ষে ১৯০৫ সাল হতেই সাম্প্রদায়ীকতা প্রকট আকার ধারণ করে। নজরুল হলেন জনগণের কবি। ভারতীয় উপমহাদেশের স্বাধীনতার প্রশ্নে তিনি সবাইকে একটি বিন্দুতে অবস্থান করার জন্যে আহ্বান জানিয়েছিলেন।
ভারতীয় উপমহাদেশের সাম্প্রদায়ীকতা রোধে নজরুলের অবস্থান
কবি অসুন্দরকে পরিহার করে সুন্দর ও সত্যকে প্রতিষ্ঠানিক রূপ দেবার জন্য সর্বদা চেষ্টা করে গেছেন। তাইতো তার রচিত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির গানে বাণীর অবস্থান এই রকম-
(১) মোরা একই বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু-মুসলমান ।
(২) জাতের নামে বজ্জাতি সব জাত জালিয়াত খেলছে জুয়া।
এ দুটি গানের দর্শন সর্বভাগে একটি শব্দই রেখাপাত করেছে তা হলো নজরুল ইসলাম কোনোভাবেই সাম্প্রদায়ীকতার পক্ষে নয়। তাইতো হিন্দু ও মুসলমানকে তিনি একই বৃত্তের দুটি কুসুমরূপে আখ্যা দিয়েছেন এবং বলেছেন মুসলিম তার নয়নমণি হিন্দু তার প্রাণ।
যারা মানুষ হয়ে জন্ম নিয়ে বিভিন্ন জাত বলে নিজেকে জাহির করেন নজরুল তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ উপস্থাপন করেছেন। তিনি বলেছেন” নারায়ণের জাত যদি নাই তোদের কেন জাতের বালাই” কবি বোঝাতে চেয়েছেন এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের যিনি সৃষ্টি করেছেন তার কি কোনো জাত আছে, ভগবান বা আত্মার কি কোনো জাত আছে? আজকের এই পৃথিবীতে মানুষের মধ্যে তেনাতেন।
মানুষই সৃষ্টি করেছেন। মানবতার কবি কাজী নজরুল সমগ্র জাতিকে অন্য অনধিক থেকে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদমুখর হবার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানান। কারণ ব্রিটিশরা যদি ভারতীয় জনগণের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে পারে তা হলে তাদের শক্তি অপরাজেয় থাকবে।
স্বাধীন চেতনাকে জাগ্রত করবার লক্ষ্যে সর্বশ্রেণীর জনগণের কাছে নজরুল তাঁর লেখনী পৌঁছাবার চেষ্টা করেছেন। তাইতো তার রচন রয়েছে বিভিন্ন ধর্মের সম্মিলন। সে প্রশ্নে সবধর্মের মানুষই নজরুলকে মহাপুরুষ আখ্যা দিয়েছেন।
আরও দেখুনঃ