কাজী নজরুলের প্রাদেশিক সঙ্গীত । নজরুলের ভাবনা

কাজী নজরুলের প্রাদেশিক সঙ্গীত : প্রাদেশিকসঙ্গীত নজরুল রচিত সঙ্গীত সম্ভারের একটি অংশ বটে। তৎকালীণ সময়ের অবিভক্ত ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের সঙ্গীত অনুসরণেই নজরুলের প্রাদেশিক সঙ্গীত রচিত।

 

কাজী নজরুলের প্রাদেশিক সঙ্গীত

 

কাজী নজরুলের প্রাদেশিক সঙ্গীত । নজরুলের ভাবনা

সাঙ্গীতিক কাঠামো বৈচিত্র্যপূর্ণ হলেও নজরুলসঙ্গীত হিসাবেই গানগুলো প্রতিষ্ঠিত। নিয়মতান্ত্রিক আলোচনা ও তথ্যের ভিত্তিতে নজরুলের প্রা-দেশিক সঙ্গীত নিয়ে আমরা আলোচনা করার চেষ্টা করবো।

প্রাদেশিক সঙ্গীত রচনার উৎস :

নজরুলের প্রা-দেশিক সঙ্গীত রচনার মূল কারণ লোকসঙ্গীতানুরাগ। গবেষণার ভিত্তিতে দেখা গিয়েছে যে নজরুলের প্রাদেশিক সঙ্গীতগুলো বিভিন্ন প্রদেশের লোকজ ঐতিহ্য বহন করে। বিভিন্ন প্রদেশের জাতীয়তাবাদের প্রেক্ষাপটে মূলত এপর্যায়ের সঙ্গীত রচিত।

প্রাদেশিক সঙ্গীত কি লোক সঙ্গীতের আঙ্গিকে রচিত :

প্রাদেশিক সঙ্গীতের সংজ্ঞা অনুসারে এ পর্যায়ের গান লোকসঙ্গীত আঙ্গিকের। শব্দ, বাণী, ছন্দ অর্থাৎ সঙ্গীতের ব্যকরণ গত দিক দিয়ে এগান লোক সঙ্গীতের আদলে রচিত।

 

কাজী নজরুলের প্রাদেশিক সঙ্গীত

 

নজরুলের প্রাদেশিক সঙ্গীতে বাক্য সমন্বয় :

নজরুলের প্রা-দেশিক সঙ্গীতের অবস্থান মোটামুটিভাবে লঘু প্রকৃতির। কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর গানের ধরন, সে যে পর্যায়েরই হোক না কেন শব্দ নির্বাচনে এক ধরনের পরিপক্কতা খুঁজে পাওয়া যায়। প্রাদেশিক সঙ্গীতের উপকরণে বিভিন্নতা থাকলেও শব্দ চয়ন সার্বিকভাবে কাছাকাছি।

রাগ-রাগিনীর সমন্বয় :

প্রাদেশিক সঙ্গীত রচনায় নজরুলের শাস্ত্রীয় দক্ষতার পরিচয় এতটা মেলে না। প্রাদেশিক সঙ্গীত লঘু প্রকৃতির বটে। কিন্তু রাগ-রাগিনী এত বাধ্য বাধকতা নেই। শুধু ইহলৌকিক চলমান সুরের অবস্থানই এগানের বৈশিষ্ট।

তাল প্রসঙ্গে :

নজরুলের প্রাদেশিক গানে যে সকল তাল ব্যবহৃত হয়েছে তার মধ্যে ঝাঁপতাল, তেওড়া, দাদ্রা, কাহারবা বেশি দেখা যায় ।

যন্ত্রের ব্যবহার :

নজরুল তাঁর প্রাদেশিক সঙ্গীতের লঘু সঙ্গীতে ব্যবহৃত যন্ত্রই ব্যবহার করেছেন। যেখানে রয়েছে বাঁশি, ম্যান্ডোলিন, এস্রাজ, মন্দিরা, তবলা প্রভৃতি যন্ত্র সমন্বয় ।

 

কাজী নজরুলের প্রাদেশিক সঙ্গীত

 

নজরুলের প্রাদর্শিক সঙ্গীতের অবয়ব :

কাজী নজরুল ইসলামের এ গানের অবয়ব চারটি ভাগে বিভক্ত। প্রথমে স্থায়ী দ্বিতীয়ত অন্তরা, তৃতীয়ত সঞ্চারী চতুর্থত, আভোগ। এই চারটি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবার মাধ্যমে এই গান সম্পন্ন হয় ।

গীতিশৈলী :

লঘু সঙ্গীত হবার কারণে এর গায়ন প্রক্রিয়া লঘু প্রকৃতির। সাধারণ সঙ্গীতের মতোই এ পর্যায়ের গানের পরিবেশন পদ্ধতি উপস্থাপিত হয় ৷

স্বার্থকতা :

গানের বৈচিত্র্যতার দিক দিয়ে সবার শীর্ষে নজরুল। তাঁর গানের বৈচিত্র্যসাধনের জন্য সব ধরনের সঙ্গীত তিনি রচনা করেছেন। তার মধ্যে একটি প্রাদেশিক সঙ্গীত । বাংলা গানের সমৃদ্ধির জন্য তাঁর এই চেষ্টা স্বার্থকতা লাভ করেছে।

 

google news logo

 

নজরুলের প্রাদেশিক সঙ্গীতের মূল্যায়ন :

মূল্যবোধের দৃষ্টিতে সঙ্গীত, সঙ্গীত গবেষক, সঙ্গীতে শিল্পী সবাই একমত যে, হোক না খুব কম সংখ্যক গান তবুও ভারতীয় উপমহাদেশের

উপসংহার :

উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষাপটে আমরা একটি বিন্দুতে মিলিত হয়েছি যে, ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন প্রদেশের সাঙ্গীতিক ধারা নজরুলের প্রা-দেশিক সঙ্গীতে বিদ্যমান এবং পরিবেশন করতে গিয়ে আমরা অনুভব করছি এ পর্যায়ের সঙ্গীতের সমন্বয়কৃত ভাবধারা ।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment