কাজী নজরুলের গানে উপমা অলঙ্কারের প্রয়োগ : যাকে তুলনার বিষয় করা হয় তাকে বলা হয় উপমেয় ও এই উপমেয়ের সঙ্গে যার তুলনা করা হয় তাকে উপমান বলা হয়।
কাজী নজরুলের গানে উপমা অলঙ্কারের প্রয়োগ । নজরুলের ভাবনা
উপমা অলঙ্কারে একই বাক্যের অন্তর্গত এই উপমেয় ও উপমান দুইটি বিজাতীয় বস্তু হওয়া চাই। এই বিজাতীয় বস্তু-দুইটির মধ্যে কোনো বিসদৃশ ধর্মের উল্লেখ না করে গুণগত, ক্রিয়াগত বা অবস্থাগত দিক দিয়ে এদের মধ্যে সাদৃশ্য দেখানো হয়ে থাকে। দৃষ্টান্তের দ্বারা একথার তাৎপর্য ব্যাখ্যা করা হল । নজরুলের গানের একটা ছত্র হল- “প্রদীপ-শিখা সম কাঁপিছে প্রাণ মম।”
এখানে প্রাণকে তুলনা বিষয় করা হয়েছে বলে প্রাণ উপমেয়। প্রাণের সঙ্গে প্রদীপ শিখার তুলনরা করা হয়েছে। প্রদীপ-শিখা তাই উপমান। সম শব্দটির দ্বারা তুলনা বুঝানো হয়েছে বলে এটা তুলনাবাচক শব্দ। কেঁপে ওঠা এই ক্রিয়াগত দিকটি উপমের প্রাণ ও উপমান প্রদীপ-শিখা উভয় ক্ষেত্রে বিরাজিত বলে এটা (কাঁপিছে, অর্থাৎ কেঁপে ওঠা) সাধারণ ধর্ম।

এই দৃষ্টান্তটিতে উপমেয় প্রাণ ও উপমান প্রদীপ- শিখা দুইটি বিজাতীয় বস্তু। এদের মধ্যে কোনোরূপ বিরুদ্ধ ধর্মের উল্লেখ না করে শুধু কেঁপে ওঠা-রূপ ক্রিয়াগত দিক দিয়ে সাদৃশ্য দেখানো হয়েছে। প্রদীপ-শিখা যেমন কেঁপে ওঠে, প্রাণ তেমনি কেঁপে উঠছে।
আরও দেখুনঃ