নজরুলের গজল । নজরুলের ভাবনা

নজরুলের গজল: গজল প্রেমিক-প্রেমিকার গান হলেও এ গান এমন একটি শৈলী যাতে প্রেম ও ভক্তির অপূর্ব মিলন ঘটেছে। পার্থিব প্রেমের পাশাপাশি গজল গানে আছে অপার্থিব প্রেম, যে প্রেমে স্রষ্টার প্রতি আত্মার আকূতি নিবেদিত। গজল গানে স্রষ্টা আর তার প্রেরিত মহাপুরুষদের প্রতি ভক্তির সঙ্গে মোক্ষ লাভের ইচ্ছা এসে মেলবন্ধন ঘটিয়েছে পার্থিব প্রেমের সঙ্গে।

 

নজরুলের গজল

 

নজরুলের গজল । নজরুলের ভাবনা

 

গজল শব্দটি আরবী। এর অর্থ হচ্ছে প্রণয়ন বিষয়ক কবিতা। ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দের ৯ সেপ্টেম্বরে নজরুলের দ্বিতীয় পুত্র বুলবুল ভূমিষ্ঠ হয়। পুত্রের নামানুযায়ী তিনি তাঁর সঙ্গীত গ্রন্থের নাম রাখেন ‘বুলবুল’। এ সময় (১৯২৬ খ্রিস্টাব্দ) থেকেই নজরুল গজল গান রচনায় মেতে ওঠেন।

খান মঈনুদ্দীনের মতানুযায়ী মিশরীয় নী ফরিদার নৃত্য সহযোগে উর্দু গজল ‘কিসকি খায়রো মায় করবো মে দিল হিলা দিয়া- র সুরে ১৩৩৩ সালের ২৮ অগ্রহায়ণে রচনা করেন আসে বসন্ত ফুলবনে সাজে বনভূমি সুন্দরী’। এরপর গজল গান রচনায় নজরুল অসামান্য দক্ষতা অর্জন করেন।

 

নজরুলের গজল

 

এ প্রসঙ্গে নলিনীকান্ত সরকার মনে করেন একদিন তাঁর বাড়িতে হিন্দুস্থানী ভিখারী নারী-পুরুষের কণ্ঠে ‘জাগো পিয়া’ এই গজল গানটি শুনে নজরুল এমনই উদ্বুদ্ধ হয়ে ওঠেন যে সঙ্গে সঙ্গে তিনি ঐ সুরের কাঠামোতে ‘নিশি ভোর হল জাগিয়া, পরাণপিয়া এই বিখ্যাত গজলটি রচনা করেন। এখান থেকেই তাঁর গজল গান রচনার সূত্রপাত।

“নিশি ভোর হল” গজলটি সন্দেহাতীতরূপে, নজরুলের প্রথম গজল রচনা নয় কেননা এর আগেই তিনি বাগিচায় বুলবুলি’, ‘বসিয়া বিজনে’ প্রভৃতি গজল রচনা করেন। নলিনী বাবুর কথা ঠিক হলে গজলটি জেলেটোলার বাড়িতে রচিত হয়েছে ধরতে হয় কিন্তু বুদ্ধদের বসুর মতে কবি ঢাকায় বসে গজলটি রচান করেন এবং শ্রীবসু সম্পাদিত, ঢাকা হতে প্রকাশিত ১৩৩৪ সালের চৈত্র সংখ্যা প্রগতি’তে গজলটি প্রকাশিত হয়।

 

google news logo
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

 

যা হোক এ সময় থেকেই নজরুলের সঙ্গীত রচনায় সে স্বকীয়তা সুস্পষ্টরূপে ফুটে উঠতে থাকে সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment