নজরুলের কাব্যগ্রন্থ: ১৯২১ সালের ডিসেম্বর মাসে কুমিল্লা থেকে কলকাতা ফেরার পথে নজরুল দুটি বৈপ্লবিক সাহিত্যকর্মের জন্ম দেন। এই দুটি হচ্ছে বিদ্রোহী কবিতা ও ভাঙ্গার গান সঙ্গীত। এগুলো বাংলা কবিতা ও গানের ধারাকে সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছিল। বিদ্রোহী কবিতার জন্য নজরুল সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।
নজরুলের কাব্যগ্রন্থ । নজরুলের ভাবনা
একই সময় রচিত আরেকটি বিখ্যাত কবিতা হচ্ছে কামাল পাশা- এতে ভারতীয় মুসলিমদের খিলাফত আন্দোলনের অসারতা সম্বন্ধে নজরুলে দৃষ্টিভঙ্গি এবং সমকালীন আন্তর্জাতিক ইতিহাস-চেতনার পরিচয় পাওয়া যায়। ১৯২২ সালে তার বিখ্যাত কবিতা-সংকলন অগ্নিবীণা প্রকাশিত হয়। এই কাব্যগ্রন্থ বাংলা কবিতায় একটি নতুনত্ব সৃষ্টিতে সমর্থ হয়, এর মাধ্যমেই বাংলা কাব্যের জগতে পালাবদল ঘটে।
এই কাব্যগ্রন্থের সবচেয়ে সাড়া জাগানো কবিতাগুলোর মধ্যে রয়েছে: “প্রলয়োল্লাস, আগমনী, খেয়াপারের তরণী, শাত-ইল্-আরব, বিদ্রোহী, কামাল পাশা” ইত্যাদি। এগুলো বাংলা কবিতার মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। তার শিশুতোষ কবিতা বাংলা কবিতায় এনেছে নান্দনিকতা খুকী ও কাঠবিড়ালি, লিচু-চোর, খাঁদু-দাদু ইত্যাদি তারই প্রমাণ। কবি তার মানুষ কবিতায় বলেছিলেন:
“ পূজিছে গ্রন্থ ভণ্ডের দল মূর্খরা সব শোন/ মানুষ এনেছে গ্রন্থ, গ্রন্থ আনেনি মানুষ কোন ”
নিম্নে নজরুলের কয়েকটি কাব্যগ্রন্থের নাম উল্লেখ করা হলো:

- অগ্নিবীণা; কার্তিক ১৩২৯, অক্টোবর ১৯২২ সরকার কর্তৃক বাজেয়াপ্ত
- হওয়ার পর দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয় আশ্বিন ১৩৩০ সালে।
- ছায়ানটা আনুমানিক আশ্বিন ১৩৩২, অক্টোবর ১৯২৫
- দোলন-চাঁপা; আশ্বিন ১৩৩০, অক্টোবর ১৯২৩
- বিষের বাঁশী: শ্রাবণ ১৩৩১, আগস্ট ১৯২৪
- ভাঙার গান; শ্রাবণ ১৩৩১, আগস্ট ১৯২৪
- চিত্তনামা: শ্রাবণ ১৩৩২, আগস্ট ১৯২৫
- পুবের হাওয়া; আশ্বিন ১৩৩২, অক্টোবর ১৯২৫
- সাম্যবাদী, পৌষ ১৩৩২, ডিসেম্বর ১৯২৫
- সর্বহারা: আনুমানিক আশ্বিন ১৩৩৩, অক্টোবর ১৯২৬
- ফণি-মনসা; শ্রাবণ ১৩৩৪, আগস্ট ১৯২৭
আরও দেখুনঃ