নজরুলের বিদেশী সুরের গান । নজরুলের ভাবনা

নজরুলের বিদেশী সুরের গান: নজরুলের গানের সংখ্যা চার হাজারের অধিক। নজরুলের গান নজরুল সঙ্গীত নামে পরিচিত। ১৯৩৮ সালে কাজী নজরুল ইসলাম কলকাতা বেতার কেন্দ্রের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত হন। সেখানে তিনটি অনুষ্ঠান যথাক্রমে ‘হারামণি’, ‘নবরাগমালিকা’ ও ‘গীতিবিচিত্রা’র জন্য তাকে প্রচুর গান লিখতে হতো। ‘হারামণি’ অনুষ্ঠানটি কলকাতা বেতার কেন্দ্রে প্রতি মাসে একবার করে প্রচারিত হতো যেখানে তিনি অপেক্ষাকৃত কম প্রচলিত ও বিলুপ্তপ্রায় রাগরাগিণী নিয়ে গান পরিবেশন করতেন।

কাজী নজরুল ইসলাম নবাব আলী চৌধুরীর রচনায় ‘ম আরিফুন নাগমাত’ ও ফার্সি ভাষায় রচিত আমীর খসরুর বিভিন্ন বই পড়তেন এবং সেগুলোর সহায়তা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের রাগ আয়ত্ত করতেন। এসব হারানো রাগের ওপর তিনি চল্লিশটিরও বেশি গান রচনা করেন।

 

নজরুলের বিদেশী সুরের গান

 

নজরুলের বিদেশী সুরের গান । নজরুলের ভাবনা

 

বাংলাগানের সমৃদ্ধিতে নজরুলের আর একটি উল্লেখযোগ্য অবদান হলো বিদেশী সুর সংগ্রহ। আকর্ষণীয় সুর-তা সে যে-কোনো ভাষার হোক-কানে এলেই তিনি সেটি বাংলাগানে ধরে রাখার চেষ্টা করতেন। এতে বাংলা গানের সুর ভাণ্ডার সমৃদ্ধ হয়েছে, নজরুল গীতির সুরের মাদকতা বেড়েছে।

মধ্য-প্রাচ্যের অনেকগুলি দেশের বিভিন্ন সুর তিনি সংগ্রহ করেছেন এবং হুবহু সেই সুরের ফ্রেমে বাংলা কথা বসিয়ে দিয়েছেন। যেমন তুরস্কের লোকসঙ্গীতের সুরে তিনি লিখলেন-শুকনো পাতার নুপুর পায়ে নাচিছে ঘূর্ণি রায়, ঠিক একই সুরে রচনা করলেন এই বহুখ্যাত ইসলামী সঙ্গীতটি-ত্রিতুনের “য় মোহাম্মদ এলরে দুনিয়ায়।

আরবী লোক-গীতির অনুকরণে- চমকে চকমে ধীর ভীরুপায় এবং ইজিপুসিয়ান ড্যান্সের সুরে-মোমের পুতুল মমীর দেশের মেয়ে নেচে যায় গান দুটিও প্রসঙ্গে স্মরণীয়। আরবী সুরের রুমঝুম ঝুম, কিংবা কিউবান ড্যান্সের সুরে-দূর দ্বীপবাসিনী, চিনি তোমারে চিনি ইত্যাদি।

Leave a Comment