[ADINSERTER AMP] [ADINSERTER AMP]

পউষ কবিতা । দোলনচাঁপা কাব্যগ্রন্থ । কাজী নজরুল ইসলাম | ১৯২৩

পউষ কবিতা টি বিদ্রোহী কবি কাজী-নজরুল ইসলাম এর দোলনচাঁপা কাব্যগ্রন্থ থেকে নেয়া হয়েছে । দোলনচাঁপা কবি কাজী-নজরুল ইসলাম রচিত একটি কাব্যগ্রন্থ ।এটি ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে (আশ্বিন, ১৩৩০ বঙ্গাব্দ) আর্য পাবলিশিং হাউস থেকে প্রকাশিত হয়।

 

পউষ কবিতা । দোলনচাঁপা কাব্যগ্রন্থ । কাজী নজরুল ইসলাম | ১৯২৩
কাজী-নজরুল ইসলাম [ Kazi nazrul islam ]

পউষ কবিতা

পউষ এলো গো!
পউষ এলো অশ্র”-পাথার হিম পারাবার পারায়ে
ঐ যে এলো গো-
কুজঝটিকার ঘোম্‌টা-পরা দিগন-রে দাঁড়ায়ে।
সে এলো আর পাতায় পাতায় হায়
বিদায়-ব্যথা যায় গো কেঁদে যায়,
অস্ত-বধূ (আ-হা) মলিন চোখে চায়
পথ-চাওয়া দীপ সন্ধ্যা-তারায় হারায়ে।

পউষ এলো গো-
এক বছরের শ্রানি- পথের, কালের আয়ু-ক্ষয়,
পাকা ধানের বিদায়-ঋতু, নতুন আসার ভয়।
পউষ এলো গো! পউষ এলো-
শুক্‌নো নিশাস্‌, কাঁদন-ভারাতুর
বিদায়-ক্ষণের (আ-হা) ভাঙা গলার সুর-
‘ ওঠে পথিক! যাবে অনেক দূর
কালো চোখের কর”ণ চাওয়া ছাড়ায়ে।

 

পউষ কবিতা । দোলনচাঁপা কাব্যগ্রন্থ । কাজী নজরুল ইসলাম | ১৯২৩
কাজী-নজরুল ইসলাম [ Kazi nazrul islam ]

দোলনচাঁপা কাব্যগ্রন্থের

প্রথম সংস্করণে ১৯টি কবিতা পত্রস্থ হয়েছিল, সেগুলো হলো :

আজ সৃষ্টিসুখের উল্লাসে

 

দোদুল্ দুল্

 

বেলাশেষে

 

পউষ

 

পথহারা

 

ব্যথা গরব

 

উপেক্ষিত

 

সমর্পণ

 

পুবের চাতক

 

অবেলার ডাক

 

চপল-সাথী

 

পূজারিণী

 

অভিশাপ

 

আশান্বিতা

 

পিছু-ডাক

 

মুখরা

 

সাধের ভিখারিণী

 

কবি-রাণী

 

আশা

 

শেষ প্রার্থনা

 

পরবর্তী সংস্করণ

দোলনচাঁপা কাব্যগ্রন্থের তৃতীয় সংস্করণে ( শ্রাবণ ১৩৬১ বঙ্গাব্দ ) কবিতার অদলবদল করা হয়েছে। প্রথম সংস্করণের পউষ, পথহারা, অবেলার ডাক, পূজারিণী, অভিশাপ, পিছু-ডাক, কবি-রাণী কবিতাগুলি বাদ দিয়ে হংসদূতী, সে যে চাতকই জানে তার মেঘ এত কি, লাল নটের ক্ষেতে, মদালস ময়ূর-বীণা কার বাজে গান, না মিটিতে সাধ মোর বেণুকা, তোমার ফুলের মত মন, বরষা, ঐ নীল গগনের নয়ন-পাতায়, মাত্লা-হাওয়া, সবুজ শোভার ঢেউ খেলে যায়, বনমালি, বেদনা-অভিমান, নিশীথ-প্রতিম, অ-বেলায়

, হার-মানা-হার, বেদনা-মণি, পরণ-পূজা, অনাদৃতা, নীলপরী, হেতু-ভীতু, অকরুণপিয়া, মরমী, মুক্তি-বার, বিরাগিনী, হারামণি, প্রিয়ার রূপ, পাপড়ি-খোলা, বিধুরা পথিক, প্রিয়া, প্রতিবেশিনী, বাদল-দিনে, মনের মানুষ, কার বাঁশি বাজিল, দহনমালা, দুপুর-অভিসার, শেষের গান, রৌদ্র-দগ্ধের গান, আলতা-স্মৃতি কবিতাগুলি সংযেজিত করা হয়েছে। এই কবিতাগুলি “ছায়ানটে”র অন্তর্গত ছিল।

 

কবিতা পউষ কাব্যগ্রন্থ দোলনচাঁপা কাজী নজরুল ইসলাম পউষ কবিতা । দোলনচাঁপা কাব্যগ্রন্থ । কাজী নজরুল ইসলাম | ১৯২৩

 

কাজী নজরুল ইসলাম  (২৪ মে ১৮৯৯ – ২৯ আগস্ট ১৯৭৬; ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ – ১২ ভাদ্র ১৩৮৩ বঙ্গাব্দ) বিংশ শতাব্দীর প্রধান বাঙালি কবি ও সঙ্গীতকার। তার মাত্র ২৩ বৎসরের সাহিত্যিক জীবনে সৃষ্টির যে প্রাচুর্য তা তুলনারহিত। সাহিত্যের নানা শাখায় বিচরণ করলেও তার প্রধান পরিচয় তিনি কবি।

তার জীবন শুরু হয়েছিল অকিঞ্চিতকর পরিবেশে। স্কুলের গণ্ডি পার হওয়ার আগেই ১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। মুসলিম পরিবারের সন্তান এবং শৈশবে ইসলামী শিক্ষায় দীক্ষিত হয়েও তিনি বড় হয়েছিলেন একটি ধর্মনিরপেক্ষ সত্তা নিয়ে। একই সঙ্গে তার মধ্যে বিকশিত হয়েছিল একটি বিদ্রোহী সত্তা। ১৯২২ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশ সরকার তাকে রাজন্যদ্রোহিতার অপরাধে কারাবন্দী করেছিল। তিনি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অধীন অবিভক্ত ভারতের বিদ্রোহী কবি হিসেবে পরিচিত হয়েছিলেন।

যে নজরুল সুগঠিত দেহ, অপরিমেয় স্বাস্থ্য ও প্রাণখোলা হাসির জন্য বিখ্যাত ছিলেন, ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মারাত্মকভাবে স্নায়বিক অসুস্থতায় আক্রান্ত হয়ে পড়লে আকস্মিকভাবে তার সকল সক্রিয়তার অবসান হয়। ফলে ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যু অবধি সুদীর্ঘ ৩৪ বছর তাকে সাহিত্যকর্ম থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন থাকতে হয়। বাংলাদেশ সরকারের প্রযোজনায় ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে তাকে সপরিবারে কলকাতা থেকে ঢাকা স্থানান্তর করা হয়। ১৯৭৬ সালে তাকে বাংলাদেশের জাতীয়তা প্রদান করা হয়। এখানেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

 

google news logo
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

বিংশ শতাব্দীর বাঙালির মননে কাজী নজরুল ইসলামের মর্যাদা ও গুরুত্ব অপরিসীম। বাংলাদেশে তাকে “জাতীয় কবি“ হিসাবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তার কবিতা ও গানের জনপ্রিয়তা বাংলাভাষী পাঠকের মধ্যে তুঙ্গস্পর্শী। তার মানবিকতা, ঔপনিবেশিক শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে দ্রোহ, ধর্মীয়গোঁড়ামির বিরুদ্ধতা বোধ এবং নারী-পুরুষের সমতার বন্দনা গত প্রায় একশত বছর যাবৎ বাঙালির মানসপীঠ গঠনে ভূমিকা রেখে চলেছে।

আরও পড়ুন:

Leave a Comment