[ADINSERTER AMP] [ADINSERTER AMP]

আজ সৃষ্টিসুখের উল্লাসে কবিতা । দোলনচাঁপা কাব্যগ্রন্থ । কাজী নজরুল ইসলাম | ১৯২৩

আজ সৃষ্টিসুখের উল্লাসে কবিতা টি বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর দোলনচাঁপা কাব্যগ্রন্থ থেকে নেয়া হয়েছে । দোলনচাঁপা কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত একটি কাব্যগ্রন্থ ।এটি ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে (আশ্বিন, ১৩৩০ বঙ্গাব্দ) আর্য পাবলিশিং হাউস থেকে প্রকাশিত হয়।

 

আজ সৃষ্টিসুখের উল্লাসে কবিতা । দোলনচাঁপা কাব্যগ্রন্থ । কাজী নজরুল ইসলাম | ১৯২৩
কাজী-নজরুল ইসলাম [ Kazi nazrul islam ]

আজ সৃষ্টিসুখের উল্লাসে কবিতা

আজ     সৃষ্টি সুখের উল্লাসে–
মোর     মুখ হাসে মোর চোখ হাসে মোর টগবগিয়ে খুন হাসে
আজ     সৃষ্টি-সুখের উল্লাসে।

আজকে আমার রুদ্ধ প্রাণের পল্বলে –
বান ডেকে ঐ জাগল জোয়ার দুয়ার – ভাঙা কল্লোলে।
আসল হাসি, আসল কাঁদন
মুক্তি এলো, আসল বাঁধন,
মুখ ফুটে আজ বুক ফাটে মোর তিক্ত দুখের সুখ আসে।
ঐ         রিক্ত বুকের দুখ আসে –
আজ       সৃষ্টি-সুখের উল্লাসে!

আসল উদাস, শ্বসল হুতাশ
সৃষ্টি-ছাড়া বুক-ফাটা শ্বাস,
ফুললো সাগর দুললো আকাশ ছুটলো বাতাস,
গগন ফেটে চক্র ছোটে, পিণাক-পাণির শূল আসে!
ঐ     ধূমকেতু আর উল্কাতে
চায়     সৃষ্টিটাকে উল্টাতে,

আজ তাই দেখি আর বক্ষে আমার লক্ষ বাগের ফুল হাসে
আজ সৃষ্টি-সুখের উল্লাসে!
আজ     হাসল আগুন, শ্বসল ফাগুন,
মদন মারে খুন-মাখা তূণ
পলাশ অশোক শিমুল ঘায়েল
ফাগ লাগে ঐ দিক-বাসে
গো     দিগ বালিকার পীতবাসে;

আজ     রঙ্গন এলো রক্তপ্রাণের অঙ্গনে মোর চারপাশে
আজ     সৃষ্টি সুখের উল্লাসে!
আজ     কপট কোপের তূণ ধরি,
ঐ       আসল যত সুন্দরী,
কারুর পায়ে বুক ডলা খুন, কেউ বা আগুন,
কেউ মানিনী চোখের জলে বুক ভাসে!
তাদের প্রাণের ‘বুক-ফাটে-তাও-মুখ-ফোটে-না’ বাণীর বীণা মোর পাশে
ঐ    তাদের কথা শোনাই তাদের
আমার চোখে জল আসে
আজ   সৃষ্টি সুখের উল্লাসে!

আজ     আসল ঊষা, সন্ধ্যা, দুপুর,
আসল নিকট, আসল সুদূর
আসল বাধা-বন্ধ-হারা ছন্দ-মাতন
পাগলা-গাজন-উচ্ছ্বাসে!
ঐ      আসল আশিন শিউলি শিথিল
হাসল শিশির দুবঘাসে
আজ     সৃষ্টি-সুখের উল্লাসে!

আজ     জাগল সাগর, হাসল মরু
কাঁপল ভূধর, কানন তরু
বিশ্ব-ডুবান আসল তুফান, উছলে উজান
ভৈরবীদের গান ভাসে,
মোর ডাইনে শিশু সদ্যোজাত জরায়-মরা বামপাশে।

মন ছুটছে গো আজ বল্গাহারা অশ্ব যেন পাগলা সে।
আজ সৃষ্টি-সুখের উল্লাসে!
আজ সৃষ্টি-সুখের উল্লাসে!!

 

আজ সৃষ্টিসুখের উল্লাসে কবিতা । দোলনচাঁপা কাব্যগ্রন্থ । কাজী নজরুল ইসলাম | ১৯২৩
কাজী-নজরুল ইসলাম [ Kazi nazrul islam ]

দোলনচাঁপা কাব্যগ্রন্থের

প্রথম সংস্করণে ১৯টি কবিতা পত্রস্থ হয়েছিল, সেগুলো হলো :

 

আজ সৃষ্টিসুখের উল্লাসে

দোদুল্ দুল্

বেলাশেষে

পউষ

পথহারা

ব্যথা গরব

উপেক্ষিত

সমর্পণ

পুবের চাতক

অবেলার ডাক

চপল-সাথী

পূজারিণী

অভিশাপ

আশান্বিতা

পিছু-ডাক

মুখরা

সাধের ভিখারিণী

কবি-রাণী

আশা

শেষ প্রার্থনা

 

google news logo
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

 

পরবর্তী সংস্করণ

দোলনচাঁপা কাব্যগ্রন্থের তৃতীয় সংস্করণে ( শ্রাবণ ১৩৬১ বঙ্গাব্দ ) কবিতার অদলবদল করা হয়েছে। প্রথম সংস্করণের পউষ, পথহারা, অবেলার ডাক, পূজারিণী, অভিশাপ, পিছু-ডাক, কবি-রাণী কবিতাগুলি বাদ দিয়ে হংসদূতী, সে যে চাতকই জানে তার মেঘ এত কি, লাল নটের ক্ষেতে, মদালস ময়ূর-বীণা কার বাজে গান, না মিটিতে সাধ মোর বেণুকা, তোমার ফুলের মত মন, বরষা, ঐ নীল গগনের নয়ন-পাতায়, মাত্লা-হাওয়া, সবুজ শোভার ঢেউ খেলে যায়, বনমালি, বেদনা-অভিমান, নিশীথ-প্রতিম, অ-বেলায়, হার-মানা-হার, বেদনা-মণি, পরণ-পূজা, অনাদৃতা, নীলপরী, হেতু-ভীতু, অকরুণপিয়া, মরমী, মুক্তি-বার, বিরাগিনী, হারামণি, প্রিয়ার রূপ, পাপড়ি-খোলা, বিধুরা পথিক, প্রিয়া, প্রতিবেশিনী, বাদল-দিনে, মনের মানুষ, কার বাঁশি বাজিল, দহনমালা, দুপুর-অভিসার, শেষের গান, রৌদ্র-দগ্ধের গান, আলতা-স্মৃতি কবিতাগুলি সংযেজিত করা হয়েছে। এই কবিতাগুলি “ছায়ানটে”র অন্তর্গত ছিল।

আরও পড়ুন:

Leave a Comment